বিএনপি নেতা শাহীন রাতারাতি কোটিপতি | তদন্ত রিপোর্ট

বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৫১ অপরাহ্ন

জাতীয় সাপ্তাহিক তদন্ত রিপোর্ট পত্রিকায় সারাদেশে জেলা/উপজেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা জীবন বৃত্তান্ত পাঠান ই-মেইলে:- tadantareport1992@gmail.com কিংবা যোগাযোগ:- +8801719-194493।

জাতীয় সাপ্তাহিক তদন্ত রিপোর্ট পত্রিকায় সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে।

বিএনপি নেতা শাহীন রাতারাতি কোটিপতি

বিএনপি নেতা শাহীন রাতারাতি কোটিপতি

চাঁদাবাজি, লুটপাট ও চোরাচালানের বদৌলতে বনে গেছেন কোটিপতি
চাঁদাবাজি, লুটপাট ও চোরাচালানের বদৌলতে বনে গেছেন কোটিপতি

গোয়াইনঘাট সংবাদাতা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সরকারের পতনের দিনই নেতাকর্মীদের আইন নিজ হাতে তুলে না নিতে কঠোর বার্তা দেন। এরই অংশ হিসেবে চাঁদাবাজি, লুটপাট ও দখলবাজির অভিযোগে ইতোমধ্যে সমগ্রঃ দেশের অগণিত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। তারপরও থেমে নেই সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় এক বিএনপি নেতার চাঁদাবাজি-দখলবাজি। বিএনপির এ নেতার চাঁদাবাজি ও লুটপাটে অতিষ্ঠ এ উপজেলার মানুষজন। তিনি গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহিন আহমদ। তার ক্যাডারবাহিনীর বিরুদ্ধে উঠেছে চোরাচালান, চাঁঁদাবাজি, হামলা ও লুটপাটের বিস্তর অভিযোগ।

জানা গেছে- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হওয়ার পর সারা দেশের মানুষ যখন বিজয় উল্লাসে মেতে উঠেন। তখন বিএনপি নেতা শাহিনের নেতৃত্বে গোয়াইনঘাটের জাফলং ইউনিয়নের সোনারহাট বিজিবি ক্যাম্পে হামলা ও লুটপাট করা হয়। এ সময় শাহীন ও তার বাহিনী বিজিবি ক্যাম্প থেকে কয়েক লাখ টাকার সম্পদ লুট করেন। তাদের হামালায় আহত হন সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিজিবি’র সদস্যরা। এই হামলা ও সরকারি সম্পত্তি লুটপাটের ঘটনায় সোনারহাট বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার রহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে শাহিন ও তার বাহিনীদের আসামি করে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ- শাহীন পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির শীর্ষ এক নেতার সাথে সখ্যতার সুবাধে থানাপুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যার ফলে শাহীন ও তার বাহিনী বিএনপির নাম ব্যবহার করে পশ্চিম জাফলং ও মধ্য জাফলং ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। শাহীনের বাহিনীর অন্যতম দুজন হলেন যুবদল নেতা জসিম ও সবুজ। শাহীন তার বাহিনী দিয়ে সীমান্ত দিয়ে অবাধে নিজে করছেন চোরচালান। যারা চোরচালালনের সঙ্গে জড়িত তাদের কাছ থেকে নিচ্ছেন চাঁদা।

সম্প্রতি ৫ আগস্টের পর বেপোরোয়া হয়ে ওঠা শাহীনের বিরুদ্ধে নৌকার মাঝিদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিও যারা শেয়ার করে প্রতিবাদ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে উল্টো থানায় অভিযোগ করেন শাহীন। তাছাড়া মামলার আসামি হয়েও গোয়াইনঘাট থানায় শাহীনের অবাদ বিচরণ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে- ৫ আগস্টের আগেও আর্থিক দুরবস্থায় হাদারপার বাজারে গরুর দালালি করতেন বিএনপি নেতা শাহীন। শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর এই বিএনপি নেতা নিজ এলাকায় চাঁদাবাজি, লুটপাট ও দখলদার বাহিনী গড়ে তোলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বলা হচ্ছে- চাঁদাবাজি, বিজিবি ক্যাম্পে লুটপাট, চোরচালান, মামলা দিয়ে হয়ারনীসহ বিভিন্ন অভিযোগ অভিযুক্ত শাহীন গোয়াইনঘাটে নিজস্ব সিন্ডিকেট দিয়ে নিয়ন্ত্রন করে এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। শাহীন রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। এদিকে শাহীনের বিরুদ্ধে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলারশীপ অবৈধভাবে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সে মাতুরতল বাজারে চাল বিতরণ করার কথা থাকলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তার নিজ এলাকা মনরতল বাজারে তা বিতরণ করে আসছেন। সেই বিতরণেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ- যেখানে বিএনপির হাইকমান্ড শীর্ষ নেতৃবৃন্দকেও বিভিন্ন অভিযোগে ছাড় দিচ্ছে না সেখানে শাহীন এভাবে এলাকায় নিজের বাহিনী তৈরি করে চোরচালান, চাঁদাবাজি, লুটপাট, মানুষকে মামলা দিয়ে অব্যাহতভাবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। সাধারণ মানুষকে করছেন হয়রানী। বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। শাহীনের নানা অপকর্মে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে দলের ভাবমূর্তি। কিন্তু দল থেকে তার বিরুদ্ধে কোনও অ্যাকশন নেওয়া হচ্ছেনা অদৃশ্য কারণে।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার (ওসি) তোফায়েল আহমদ সরকার গণমাধ্যমে বলেন- বিজিবি’র মামলার আসামি থানায় আসা যাওয়ার প্রশ্ন উঠে না। তদন্ত চলছে, তবে এই মামলা সম্পর্কে তদন্তকারী কর্মকর্তা ভালো জানবেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থানার এসআই জহুরলাল দত্ত গণমাধ্যমে জানান, এই মামলাটি আমার কাছে নেই।

পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত এস এম শাহিন আহমদ গণমাধ্যমে বলেন- আমার বিরুদ্ধে মামলা আছে কিন্তু লুটপাট চাঁদাবাজির সঙ্গে আমি জড়িত নই। বিজিবি ক্যাম্পে হামলার ঘটনার ব্যাপারে কিছু আমি জানিনা। ক্যাম্পে হামলার দিন আমি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সাথে সিলেটে ছিলাম।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

তবে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন- অভিযুক্ত বিএনপি নেতা যদি ৫ আগস্টের পর বিজিবি’র ক্যাম্পে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় আসামি থাকেন তাহলে তিনি তো বহিষ্কার হওয়ার কথা ছিল। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে লুটপাট, চাঁদাবাজি ও কোনও ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড করার সুযোগ নেই। যদি কেউ করে থাকেন তিন যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের স্পষ্ট বার্তা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo
error: Content is protected !!